আজ থেকে ১০০ বছর আগের কথা। এক বিখ্যাত জুতোর কোম্পানি তাদের এক প্রতিনিধিকে
আফ্রিকায় পাঠিয়েছিলেন সেখানে জুতো বিক্রির কেমন সম্ভাবনা আছে তা দেখার
জন্য। ভদ্রলোক আফ্রিকায় গিয়ে সবকিছু দেখে আসলেন। সেখান থেকে ফিরে আসার পর
কোম্পানিকে জানালেন, ‘আফ্রিকায় জুতো বিক্রি সম্ভব নয়। কারণ ওখানে কেউ
জুতোই পরে না।’
আরেকটা কোম্পানি তাদের প্রতিনিধিকে ঠিক একই উদ্দেশ্যে
আফ্রিকায় পাঠিয়েছিলেন। ওই প্রতিনিধি আফ্রিকা থেকে ঘুরে আসার পর তার
কোম্পানিকে জানান, ‘ওখানে জুতো বিক্রির প্রচুর সম্ভাবনা আছে। কারণ
ওখানে কোনো জুতোর কোম্পানি নেই, তাই সেখানে কেউ জুতাও পরে না। ওখানকার
মানুষদেরকে যদি জুতো পরার উপকারিতা সম্পর্কে বোঝানো যায়, তাহলে আমাদের
জন্য সেটা খুবই লাভজনক হবে।’
উপরের দুটি ঘটনা একই, কিন্তু দু’জন
প্রতিনিধির দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। সুতরাং বুঝতেই পারছেন,
সাফল্যের মধ্যেও আকাশ-পাতাল পার্থক্য। ব্যক্তি হিসেবে আপনি নিজেকে এবং
আপনার আশপাশের জগতকে কিভাবে দেখছেন আর ব্যাখ্যা করছেন— তার উপর নির্ভর করছে
আপনার সাফল্য বা ব্যর্থতা।
সাফল্য পেতে হলে আপনার ভিতরটা অর্থাৎ আপনার
মানসিকতা এমন হতে হবে যেন তা কঠিন বাধা-বিপত্তির সময়ও প্রশান্ত থাকতে
পারে। একটু খেয়াল করে দেখবেন, যখন আপনার মন-মেজাজ খারাপ থাকে, তখন
প্রিয়জনের সান্নিধ্যও অসহ্য লাগে। আবার যখন মন খুব ভালো থাকে, তখন
প্রিয়জন আপনার সাথে রাগ করলেও তা মিষ্টি মনে হয়।
ঠিক তেমনিভাবে আপনি
যদি হাসি-খুশি, প্রশান্ত মন নিয়ে কোনো কাজ করেন, তাহলে জটিল কাজও আপনার
কাছে ডাল-ভাত মনে হবে। আর যদি খিটখিটে-বদ মেজাজ নিয়ে কোনো সহজ কাজও করতে
যান, তখন সেটাকে বাংলাদেশ ফুটবল দলের বিশ্বকাপ জয়ের মতোই কঠিন মনে হবে।
একটা কথা সবসময় মনে রাখবেন যেটা মনোবিজ্ঞানীরা বলে থাকেন, “যখন বাইরের
জগতের নানারকম ঘটনায় আপনার মন বিচলিত হবে, তখন বাইরের জগতকে পাল্টাবার
চেষ্টা না করে চেষ্টা করুন আপনার অন্তর্জগতকে পাল্টাতে, আপনার
দৃষ্টিভঙ্গিকে পাল্টাতে।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)